Share s death, his incompetent son, Humayun, lost most of the territory Babur had gained. Babur’s 13-year-old grandson took over the throne after Humayun’s death. The Mughal Empire in India.pdf - 2 MB

Share ch18_3.pdf - 2 MB

Share Cambridge History of Turkey 3.pdf - 10 MB

Share Cambridge History of Turkey 3.pdf - 10 MB

Share F21D57C4_9913_5321_BB9830F0BB762B4E.pdf - 2 MB

Share F21D57C4_9913_5321_BB9830F0BB762B4E.pdf - 2 MB

Share An Overview of Western Civilization - 4 MB

Share An Overview of Western Civilization - 4 MB

Share Europer Itihas.pdf - 20 MB

Share Europer Itihas.pdf - 20 MB

Share ১৯ শতকের পূর্ববঙ্গের সমাজ - মুনতাসির মামুন.pdf - 14 MB

Share ১৯ শতকের পূর্ববঙ্গের সমাজ - মুনতাসির মামুন.pdf - 14 MB

Share banglay_search_engine_optimization.pdf - 5 MB

Share banglay_search_engine_optimization.pdf - 5 MB

Share Banglar Itihash Moghol Amal.pdf - 14 MB

Share Banglar Itihash Moghol Amal.pdf - 14 MB

Share Andhokarer Eksho Bochhor by Anisul Haque (Amarboi.com).pdf - 4 MB

Share Andhokarer Eksho Bochhor by Anisul Haque (Amarboi.com).pdf - 4 MB

Share 1149169-A5_ebooksclub.org__A_History_of_Japan__Second_Edition__From_Stone_Age_to_Superpower.pdf - 984 KB

Share 1149169-A5_ebooksclub.org__A_History_of_Japan__Second_Edition__From_Stone_Age_to_Superpower.pdf - 984 KB


জেনে নিন, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিদের শেষ কথা


দীর্ঘকাল ব্রিটেনে থাকার সময়ে দেখেছি কিভাবে সেখানে প্রথমে লেখক, সাংবাদিক টিভি উপস্থাপকরা এবং পরে পলিটিশিয়ানরা মৃত্যুদণ্ডবিরোধী জনমত গড়ে তোলেন যার পরিণতিতে ১৯৬৫-তে তাদের দেশে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ হয়ে যায়
আগামী বছর, ২০১৫-তে ব্রিটেনে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ হওয়ার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জনগণকে আবার মৃত্যুদণ্ডের অনৈতিকতা, অযৌক্তিকতা অসভ্যতা বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্যে ব্যাপক আয়োজন হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে টেলিভিশন, রেডিও, অনলাইন এবং পত্রপত্রিকায় বিষয়টি প্রায়ই আলোচিত হচ্ছে
এছাড়া ২০১৫ জুড়ে চলবে নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক আনন্দ গিরিধরদাসের লেখা বই দি ট্রু আমেরিকান (The True American)-এর মুভি রূপান্তর, যেটি করবেন অস্কার বিজয়ী একমাত্র নারী ডিরেক্টর ক্যাথরিন বিগেলো
এই মুভির নায়ক রইসউদ্দিন ভূইয়া যিনি ২০০১- সাতাশ বছর বয়সে সিলেট থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন তার ক্যারিয়ার গড়তে। সেখানে টুইন টাওয়ার ধ্বংস হওয়ার পর মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধকামী শ্বেতাঙ্গ মার্ক স্ট্রোম্যানের গুলিতে রইস গুরুতরভাবে আহত হন এবং এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। তবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান এবং তার আঁততায়ীকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মার্ক স্ট্রোম্যানের গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হয় এবং সেই অপরাধে তার মৃত্যুদণ্ড হয়
স্ট্রোম্যানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রইসউদ্দিন চেষ্টা করে যান সেটা রোধ করতে। কিন্তু রইসউদ্দিন ব্যর্থ হন। স্ট্রোম্যানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তারপর থেকে রইসউদ্দিন, যিনি এখন একজন আইটি এক্সপার্ট, তিনি আমেরিকা জুড়ে মৃত্যুদণ্ড বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই আন্দোলন আরো বেগবান হবে দি ট্রু আমেরিকান মুভিটির শুটিংয়ের সময়ে এবং সেটি বিশ্বজুড়ে রিলিজড হওয়ার পরে
মানুষের কৌতূহল থাকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি, দণ্ডিত হওয়ার পরে এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পূর্ব মুহূর্তে, কি ভেবেছিলেন কি বলেছিলেন সেটা জানতে
বিষয়ে ইংরেজ লেখক চার্লস ডিকেন্স (১৮১২১৮৭০) তার জনপ্রিয় উপন্যাস টেইল অফ টু সিটিজ (A Tale of Two Cities, ১৮৫৯)- কল্পনা করেছেন। ফ্রেঞ্চ রিভলিউশনের সময়ে, লন্ডন প্যারিস এই দুটি শহরের প্রেক্ষিতে রচিত এই উপন্যাসের শেষাংশে নায়ক সিডনি কার্টনের মৃত্যু হয় গিলোটিনে
মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে সিডনি কার্টন যে কথাগুলো বলেছিলেন সেটা ডিকেন্সের সাহিত্যকর্মে কালজয়ী হয়ে আছে। টেইল অফ টু সিটিজ-এর সূচনায় এবং সমাপ্তিতে যেসব লাইন লেখা হয়েছে সেসব সাহিত্যপ্রিয়দের মুখস্থ। সর্বকালের সর্বাধিক বিক্রিত (২০ কোটি কপির বেশি) উপন্যাসের অন্যতম হয়েছে বইটি
টেইল অফ টু সিটিজ একটি কল্পিত উপন্যাস। মৃত্যুমুখী সিডনি কার্টনের শেষ কথাগুলো ছিল চালর্স ডিকেন্সের কল্পনাপ্রসূত।
কিন্তু বাস্তবে যারা মৃত্যুদণ্ড পেয়ে মৃত্যুমুখী হয়েছিলেন তারা কি ভেবেছিলেন? কি বলেছিলেন?
বিশেষত সেই সব দণ্ডিত ব্যক্তি যারা নিরপরাধী ছিলেন? অথবা নিজেদের নিরপরাধী মনে করেছিলেন? জেনে নিন, মৃত্যুদণ্ড দণ্ডিত ব্যক্তির শেষ কথা। নিচে তাদের উক্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কাল অনুসারে উদ্ধৃত হলো
এরা ছিলেন দার্শনিক, কবি, লেখক, যোদ্ধা, বিপ্লবী যোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, স্পাই, অর্ডিনারি ক্রিমিনাল, পলিটিশিয়ান, রাজা-রানী, প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট। এই উক্তিগুলোর অধিকাংশ অনূদিত সুতরাং মৃত্যুমুখীদের পূর্ণ আবেগের প্রতিফলন এখানে ঘটেনি। উক্তিগুলো :
.
মৃত্যুর পরিণতি দুটি হতে পারে। এক. মৃত ব্যক্তি পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে যেতে পারে তার কোনো অনুভূতিই থাকবে না। দুই. বলা হয়, একটা বিশেষ পরিবর্তন হবে আত্মা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাবে
মৃত্যু যদি সব অনুভূতিকে নিঃশেষ করে দিতে পারে তাহলে এটা হবে ঘুমানোর মতো, যেখানে ঘুমন্ত ব্যক্তি কোনো স্বপ্ন দেখে না। তাহলে মৃত্যু হবে একটা বড় লাভমৃত্যু যদি রকমই হয় তাহলে আমি বলব, এটা একটা লাভ। এর ফলে এক রাতের মধ্যে সব ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু অন্যদিকে যদি মৃত্যুটি হয় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আত্মার স্থানান্তর এবং যা বলা হয় তা যদি সত্য হয় তাহলে এর চাইতে বড় আশীর্বাদ আর কি হতে পারে, বিচারকবৃন্দ?
এটা আমার কাছে পরিষ্কার যে, এখন মরলে এবং সব যত্নআত্তি থেকে মুক্ত হলে, আমার জন্য ভালো হবেকিন্তু এখন যাওয়ার সময় হয়েছে, আমার মৃত্যুর সময় হয়েছেআপনারা বেঁচে থাকবেন। কিন্তু আমি, নাকি আপনারা কে যে ভালো জায়গায় থাকবেন, সেটা ঈশ্বর বাদে কেউ জানেন না। (… it is now time to depart, for me to die, for you to live. But which of us is going to a better state is unknown to everyone but God.)
সক্রেটিস (Socrates, , খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৯৩৯৯) গৃক দার্শনিক। ৭০ বছর বয়সে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল তরুণ সমাজকে বিপথগামী করার অভিযোগে। সামান্য অর্থদণ্ড দিয়ে মুক্তির সুযোগ তাকে দেয়া হয়েছিল। তিনি সেটা নাকচ করে দেন। জেলখানা থেকে পালানোর সুযোগও তাকে দেয়া হয়েছিল। তিনি সেই সুযোগ নেননি। ক্রন্দনরত ভক্তদের সামনে রায় অনুযায়ী তিনি নিজের হাতে হেমলক বিষ খেয়ে মারা গিয়েছিলেন
.
আহ রুয়ে। আমার খুব ভয় হচ্ছে, আমার মৃত্যুর ফলে তোমাকে কষ্ট ভোগ করতে হবে।
যিশু, যিশু
জোন অফ আর্ক (Joan of Arc, ১৪১২১৪৩১) ফ্রেঞ্চ দেশপ্রেমিক এবং সর্বকালের বিস্ময়কর নারীদের অন্যতম। পুরুষের বেশে তিনি সুকৌশলী বীর যোদ্ধা রূপে ১৪২৯- অরলিয়ন্সে ইংরেজদের পরাজিত করেছিলেন। কিন্তু পরে এক যুদ্ধে তিনি ধরা পড়েন এবং ইংরেজরা তাকে ধর্মীয় ভিন্নমত প্রচারের কারণ দেখিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ফ্রান্সে রুয়ে শহরে আগুনে পুড়িয়ে তাকে ১৯ বছর বয়সে হত্যা করা হয়
.
আমার দেহের এই অংশটি কখনোই দেশদ্রোহিতা করেনি।
স্যার টমাস মোর (Sir Thomas More, ১৪৭৮১৫৩৫) মানবতাবাদি ইংরেজ চিন্তাবিদ। ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরিকে চার্চের নেতা রূপে মানতে রাজি না হওয়ায় তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। মাথা পেতে দেওয়ার সময়ে গিলোটিনের পথ থেকে নিজের দাড়ি সরিয়ে রেখে তিনি ওপরের কথাটি বলেছিলেন
.
গুড কৃশ্চিয়ান ভাই বোনেরা, আমি এখানে এসেছি মরতে। আইন অনুসারে এবং আইনের বিচারে আমাকে মরতে হবে। তাই এর বিরুদ্ধে আমি কিছু বলব না। আমি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করব না। যে কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও আমি কিছু বলব না। কিন্তু আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর যেন রাজাকে দীর্ঘজীবী করেন
তিনি যেন দীর্ঘকাল আপনাদের ওপর রাজত্ব করতে পারেন। কারণ তার চাইতে ভদ্র এবং দয়ালু রাজা আর কেউ ছিলেন না। আমার কাছে তিনি ছিলেন সবসময়ই ভালো, ভদ্র এবং আমার রাজা। যদি কেউ আমার কথা নিয়ে ভাবতে চান তাহলে আমি তাকে অনুরোধ করব সুবিচার করতে
কথা বলে আমি পৃথিবী থেকে এবং আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি। আমি সর্বান্তকরণে চাই আপনারা আমার জন্য প্রার্থনা করবেন। ঈশ্বর আমার প্রতি করুণা করুন। আমার আত্মা আমি ঈশ্বরকে সমর্পণ করছি। ওহ গড, আমার প্রতি করুণা করুনওহ গড, আমার প্রতি করুণা করুন
অ্যান বলিন (Anne Boleyn, ১৫০১ অথবা ১৫০৭১৫৩৬) ইংল্যান্ডের রানি। তিনি ছিলেন রাজা অষ্টম হেনরির দ্বিতীয় রানী। হেনরি তাকে ডিভোর্স দেন। কারণ তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দিতে পারছিলেন না। হেনরি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা পরকীয়ার অভিযোগ আনেন
কুঠারাঘাতে অ্যান বলিনের মৃত্যুদণ্ড হয়। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে (২৮ অথবা ৩৫ বছর বয়সে) মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে অ্যান বলিন কথাগুলো বলেছিলেন। মৃত্যুর আগের দিন তিনি বলেছিলেন, শুনেছি আমার জল্লাদ একজন এক্সপার্ট। আমার গলা বেশ সরু
পুত্রসন্তানের জন্ম না দিতে পারলেও অ্যান বলিনের কন্যা হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের পরম প্রতাপশালী রানি প্রথম এলিজাবেথ। ঐতিহাসিকরা বলেন, মৃত্যুর আগে অ্যান বলিন তার স্বামীর সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলেছিলেন। কারণ তিনি চেয়েছিলেন, অষ্টম হেনরি যেন তার কন্যা এলিজাবেথের প্রতি ভালো আচরণ করেন
.
কোপ মারো ব্যাটা, কোপ মারো। স্যার ওয়ালটার ্যালে (Sir Walter Raleigh, ১৫৫২১৬১৮) ইংল্যান্ডের নৌ বাহিনীর কমান্ডার কবি। যে কুঠারের আঘাতে তার শিরশ্ছেদ করা হবে সেটা দেখে তিনি বলেছিলেন, এটা একটা কড়া ওষুধ কিন্তু সব রোগ দুঃখের জন্য এটা একজন ডাক্তার।আমি চাই না আমার শত্রুরা ভাবুক মৃত্যুর ভয়ে আমি কুকড়ে গিয়েছিলাম।
তার ঘাতককে দ্বিধাগ্রস্ত দেখে তিনি বলেছিলেন, Strike man, strike.
.
দুর্নীতিগ্রস্ত স্থান থেকে আমি চলে যাব এমন একটি স্থানে যেখানে দুর্নীতি নেই। যেখানে কোনো অশান্তি হতে পারে না
প্রথম চার্লস (Charles I, ১৬০০১৬৪৯) ইংল্যান্ডের রাজা। রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ইংল্যান্ডে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী বিপ্লবী দলের কাছে পরাজিত হয় প্রথম চার্লসের সেনাবাহিনী। দেশদ্রোহিতার অভিযোগে প্রথম চার্লসকে কুঠারাঘাতে শিরচ্ছেদের দণ্ড দেয়া হয়েছিল
মৃত্যুর আগে ওপরের উক্তিটি করেছিলেন প্রথম চার্লস।
সাময়িকভাবে ইংল্যান্ডে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন বিপ্লবী নেতা অলিভার ক্রমওয়েল (১৫৯৯১৬৫৮) ম্যালারিয়া রোগাক্রান্ত হয়ে ৫৯ বছর বয়সে ক্রমওয়েলের মৃত্যুর পরে রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে তাকে কবর দেয়া হয়
কিন্তু দুই বছর পরে ১৬৬০- ইংল্যান্ডে রাজতন্ত্র ফিরে আসে। নতুন রাজা হন দ্বিতীয় চার্লস। ১৬৬১-তে রাজা প্রথম চার্লসের দ্বাদশ মৃত্যু বার্ষিকীতে ক্রমওয়েলের দেহাবশেষ কবর থেকে তুলে তাকে ফাসি দেয়া হয়েছিল। চূড়ান্ত বিচারে অবশ্য ক্রমওয়েলই বিজয়ী হয়েছেন। কারণ কালক্রমে ইংল্যান্ডে তথা ব্রিটেনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র, যেখানে রাজা-রানীর ক্ষমতা খুবই সীমিত। ক্রমওয়েলের একটি মূর্তি স্থাপিত হয়েছে পার্লামেন্ট ভবনের দোরগোড়ায়। ঘোড়ার পিঠে বসা ক্রমওয়েলের সেই মূর্তিটি দেখে সবাইকে পার্লামেন্টে ঢুকতে হয়
.
আমার মৃত্যুকে আমি মেনে নিয়েছি। কিন্তু যেভাবে মরতে হবে সেটা আমি ঘৃণা করিএটা হবে মাত্র এক মুহূর্তের ব্যথা। আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি, আমার মৃত্যু যেন হয় সাহসী মানুষের মতো
জন আনদ্রে (Jhon Andre, ১৭৫০১৭৮০) ব্রিটিশ মেজর। এই চিঠি তিনি লিখেছিলেন জেনারেল হেনরি ক্লিনটনের কাছে। স্পাইয়িংয়ের জন্য তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল এবং তিনি ফাঁসিতে মরতে চেয়েছিলেন। তার অনুরোধ উপেক্ষিত হয়েছিল
.
আমার মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের ক্ষমা করে দিচ্ছি
ষোড়শ লুই (Louis XVI, ২৩.০৮.১৭৫৪২১.০১.১৭৯৩) ফ্রান্সের রাজা। ফ্রেঞ্চ রিভলিউশনের গিলোটিনে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে তিনি কথাগুলো বলেছিলেন
.
মাফ করবেন স্যার, আমি এটা করতে চাইনি
মারি এন্তনে (Marie Antoinette, .১১.১৭৫৫১৬.১০.১৭৯৩) ফ্রেঞ্চ রিভলিউশনে নিহত ফ্রান্সের সম্রাট ষোড়শ লুই-এর স্ত্রী। সুন্দরী ব্যক্তিত্বপূর্ণ মারি এন্তনে জন্ম হয়েছিল অস্টৃয়াতে। ষোড়শ লুইয়ের সঙ্গে বিয়ের পর তিনি হন ফ্রান্সের কুইন কনসর্ট। প্রথমে ফ্রেঞ্চ জনগণের প্রিয় হলেও পরে তার অমিতব্যয়িতা এবং বহুগামিতার জন্য অপ্রিয় হন।
এটাও কথিত আছে যে, ফ্রান্সে খাদ্যাভাব দেখা দিলে তিনি বলেছিলেন, ওরা (জনগণ) কেক খেয়ে বাচুক (Let them eat cake) পরবর্তী কালে প্রমাণিত হয়, ধরনের কোনো উক্তি তিনি করেননি। তবে অলঙ্কার, পোশাক, জুয়া, ঘোড়দৌড় বাজি, প্রভৃতিতে তার অঢেল খরচের কাহিনী বিস্তৃত হয়
কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, তার জন্যই ফ্রান্স ফকির হয়ে গিয়েছিল তার ফলে বিপ্লব সূচিত হয়েছিল। বিপ্লবে ষোড়শ লুইয়ের শিরচ্ছেদের পর মারি এন্তনে- বিচার মৃত্যুদণ্ড হয়। বহু অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ছিল তার পুত্রের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন। বিচারের সময়ে প্রথমে এন্তনে (৩৭) নিশ্চুপ এবং ধীরস্থির ছিলেন। কিন্তু ওই অভিযোগের পরে তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলেন, কোনো মা বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হলে প্রকৃতিও তার উত্তর দেবে না
গিলোটিনে মৃত্যুর আগে তিনি অসতর্কতাবশত জল্লাদের পা মাড়িয়ে মঞ্চে উঠেছিলেন। তাই তিনি জল্লাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, পার্ডন মি স্যার, আই মেন্ট নট টু ডু ইট (Pardon me Sir, I meant not to do it) মারি এন্তনে জীবনী নির্ভর বহু উপন্যাস, কাহিনী, নাটক মুভি রচিত হয়েছে
১০.
আমার একমাত্র দুঃখ যে, ওই ইঁদুরটা, রোবেসপিয়েরের আগে আমাকে যেতে হচ্ছেআমার মাথা জনগণকে দেখাতে ভুলো না এটা দেখার মতো জিনিস
জর্জ জ্যাক দান্তো (Georges Jacques Danton, ১৭৫৯১৭৯৪) ফ্রেঞ্চ রিভলিউশনের অন্যতম নেতা। কৃষক পরিবারে দান্তো জন্ম হয়েছিল। সুবক্তা দান্তো ছিলেন লম্বা, চওড়া, সুদর্শন এবং তার ছিল বজ্রকণ্ঠ। জ্বালাময়ী ভাষণে তিনি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারতেন
১৭৮৯- সূচিত ফ্রেঞ্চ রিভলিউশন বা ফরাশি বিপ্লবের পরে তিনি নতুন প্রজাতন্ত্রের বিচারমন্ত্রী হয়েছিলেন। ফ্রেঞ্চ রিভলিউশনের একপর্যায়ে ১৭৯৩-তে দি রেইন অফ টেরর (The Reign of Terror) নামে ভয়ের শাসনকাল শুরু হয়ে যায়। তখন বিপ্লবের নামে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে প্রতিদিন বহু মানুষকে গিলোটিনে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়
অন্যায় বিচারে নির্দোষ মানুষকে হত্যার প্রতিবাদ দান্তো করলে নিজের বিপদ ডেকে আনেন। তার বিপ্লবী সহযোগী ম্যাক্সমিলিয়ন রোবেসপিয়ের আরো ক্ষমতাশালি হয়ে ওঠেন এবং বিপ্লব নস্যাৎ চেষ্টার অভিযোগে দান্তোকে গ্রেফতার করেন। দান্তোর বিচার দুই দিন ধরে চলে। কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থনে তার আবেগময় বক্তৃতায় জনগণ আপ্লুত হয়। রোবেসপিয়ের তার প্রধানতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন
দান্তোকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এপ্রিল ১৭৯৪- মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে দান্তো (৩৪) তার মাথা জনগণকে দেখানোর জন্য জল্লাদকে বলেছিলেন। তার মৃত্যুর পর মাথা কেটে মানুষকে দেখানো হয়েছিল। সাধারণ মানুষ মৃত দান্তোর পক্ষে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা চক্রান্তকারী রোবেসপিয়েরের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে। চাকা ঘুরে যায়
রোবেসপিয়েরকে ধরে তার বিচার করা হয়। তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ২৮ জুলাই ১৭৯৪-, অর্থাৎ দান্তোর মৃত্যুর ১১৪ দিন পরে রোবেসপিয়েরের মৃত্যু হয় গিলোটিনে। আর তারপরই রেইন অফ টেরর বা ভয়ের শাসনকাল শেষ হয়। দান্তোর শেষ কথার ভাষান্তর ওপরে উদ্ধৃত হয়েছে (My only regret is that I am going before that rat Robespierre … don’t forget to show my head to the people. It’s well worth seeing.)
১১.
আমাকে একটু সময় দিলে আমি সারা ভারতবাসীকে শিখিয়ে দিতাম কি করে বোমা বানাতে হয়
ক্ষুদিরাম বসু (.১২.১৮৮৯১১..১৯০৮) ভারতে ব্রিটিশ শাসনবিরোধী বিপ্লবী যোদ্ধা। ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম হয়েছিল পশ্চিম বাংলার মেদিনীপুরে হাবিবপুর গ্রামে। মৃত্যুর সময়ে তার বয়স ছিল ১৮ বছর মাস ১১ দিন। ৩০ এপ্রিল ১৯০৮- মুজাফফরপুর, বিহারে রাতে সাড়ে আটটায় ইউরোপিয়ান ক্লাবের সামনে বোমা ছুড়ে তিনজনকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ক্ষুদিরামের বিচার শুরু হয় ২১..১৯০৮-
বিচারক ছিলেন জনৈক ব্রিটিশ মি. কর্নডফ এবং দুইজন ভারতীয়, লাথুনিপ্রসাদ জানকিপ্রসাদ। রায় শোনার পরে ক্ষুদিরামের মুখে হাসি দেখা যায়। তার বয়স খুব কম ছিল। বিচারক কর্নডফ তাকে প্রশ্ন করেন, তাকে যে ফাঁসিতে মরতে হবে সেটা সে বুঝেছে কিনা? ক্ষুদিরাম আবার মুচকে হাসলে বিচারক আবার প্রশ্নটি করেন
ক্ষুদিরাম তখন ওপরে উদ্ধৃত কথাটি বলেন। তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ভোর ছয়টায়। ফাসির মঞ্চ ওঠার সময়ে তিনি হাসিখুশি ছিলেন। ক্ষুদিরামকে নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা লিখেছিলেন এবং অনেক গানও তখন রচিত হয়েছিল। যেমন, একবার বিদায় দে মা। তার মৃত্যুর পর ব্রিটিশদের খুন করার জন্য তরুণরা উদ্বুদ্ধ হয়েছিল
১২.
মৃত্যু কিছু না। জীবনও কিছু না। মরে যাওয়া, ঘুমিয়ে পড়া, শূন্য হয়ে যাওয়াএসবে কি আসে যায়? সবই মায়া, মরীচিকা
মাটা হারি (Mata Hari ১৮৭৬১৯১৭) ডাচ ডান্সার স্পাই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের পক্ষে স্পাইংয়ের জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। ফায়ারিং স্কোয়াডের গুলিতে তার মৃত্যুর আগে একজন নান (Nun) তাকে সান্ত¦না দিতে গেলে মাটা হারি (৪১) এই কথাগুলো বলেছিলেন। তিনি তার চোখে কালো কাপড় বাধতে রাজি হননি। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে তিনি ফায়ারিং স্কোয়াডকে হাত নেড়ে ফ্লাইং কিস দিয়েছিলেন
১৩.
বন্ধুরা, একটু পরেই তোমার একটা ভাজা আপেল দেখবে
জর্জ আপেল (George Appel? – ১৯২৮) আমেরিকান খুনি। নিউইয়র্কের একজন পুলিশকে হত্যার দায়ে ১৯২৮- জর্জ আপেলকে ইলেকটৃক চেয়ারে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল
১৪.
ব্যক্তিকে সহজেই হত্যা করা যায়, কিন্তু আদর্শকে হত্যা করা যায় না। বড় বড় সা¤্রাজ্য ভেঙে গুড়িয়ে গেছে কিন্তু আদর্শ টিকে থেকেছে
ভগত সিং (২৮..১৯০৭২৩..১৯৩১) ভারতে ব্রিটিশ শাসন বিরোধী পাঞ্জাবের মার্কসবাদী সোশালিস্ট নাস্তিক বিপ্লবী। পুলিশি হেফাজতে থাকার সময়ে লালা লাজপৎ রায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধে ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার জন সনডার্সকে হত্যার অপরাধে ভগৎ সিংকে (২৩) মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল
লাহোর জেলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে তিনি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে ফাঁসির বদলে একজন যোদ্ধা রূপে ফায়ারিং স্কোয়াডে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুরোধ করেছিলেন। সেই অনুরোধ উপেক্ষিত হয়েছিল। ইনডিয়ার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে তার সম্মানার্থে একটি ব্রঞ্জ মূর্তি স্থাপিত হয়েছে
১৫.
মৃত্যু আমার দরজায় এসে গিয়েছে। অনন্তের দিকে আমার মন উড়ে চলেছেএত সুন্দর, এত কঠিন, এত পূতপবিত্র সময়ে আমি তোমাদের জন্য কি রেখে যাব? একটাই জিনিস। সেটা হচ্ছে আমার স্বপ্ন মুক্ত ভারতের সোনালি স্বপ্ন। ১৮ এপ্রিল ১৯৩০ তারিখটি কখনোই ভুলে যেও না চট্টগ্রামে পূর্বঞ্চলীয় বিদ্রোহের দিনটিভারতের স্বাধীনতার জন্য যেসব দেশপ্রেমিক জীবন দিয়েছেন তাদের নামগুলো তোমার হৃদয়ের অন্তঃস্থলে লিখে রেখ
সূর্য সেন (পূর্ণ নাম সূর্যকুমার সেন যিনি মাস্টারদা নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন, (২২..১৮৯৪১২..১৯৩৪) চট্টগ্রামে অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের বিপ্লবী মহানায়ক। সূর্য সেনের জন্ম হয়েছিল নোয়াপাড়া, রাওজান, চট্টগ্রামে। নন্দনকাননে একটি স্কুলের টিচার সূর্য সেন যোগ দেন বিপ্লবী সংগঠন অনুশীলন সমিতি-তে। লক্ষ্য ছিল ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান
অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পর জালালাবাদ পাহাড়ের কাছে তাকে তার দলকে ঘিরে ফেলে ব্রিটিশ বাহিনী। খণ্ডযুদ্ধে মারা যান বারোজন বিপ্লবী। কেউ আহত হন। কেউ ধরা পড়েন। সূর্য সেন পালিয়ে যেতে পারেন। ছদ্মবেশ ছদ্মপরিচয়ে (এমনকি মুসলিম পরিচয়েও) সূর্য সেন কিছুদিন লুকিয়ে থাকার পর নেত্র সেন নামের এক ব্যক্তির বিশ্বাসঘাতকতায় ধরা পড়েন
সূর্য সেনকে টর্চার করা হয়। বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। চট্টগ্রাম জেলে সূর্য সেনের ফাসির মঞ্চ এখন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত। তার নামে ঢাকায় একটি ছাত্রাবাস হয়েছে। বিশ্বাসঘাতক নেত্র সেনকে হত্যা করে বিপ্লবীরা প্রতিশোধ নিয়েছিল। সূর্য সেন (৩৯) তার এক বন্ধুকে শেষ যে চিঠি লিখেছিলেন তার কয়েকটি লাইন ওপরে উদ্ধৃত হয়েছে। তবে মূল বাংলা চিঠি না পাওয়ায় তার ইংরেজি অনুবাদের একটি ভাষান্তর প্রকাশিত হয়েছে
১৬.
কুত্তার বাচ্চারা, আমার মা-কে ভালোবাসা জানিয়ে দিস
ফ্রান্সিস ক্রাউলি (Francis Crowley,? – ১৯৩৯) আমেরিকান ডাকাত খুনি। ১৯৩৯- সিং সিং জেলখানায় ইলেকটৃক চেয়ারে বসে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে তিনি এই নির্দেশ দিয়েছিলেন
১৭.
আমি শুধু একটাই অনুরোধ করছি আমাকে আমার কাজটা শেষ করতে দিন
আইজ্যাক বেবেল (Isac Babel, ১৮৯৪১৯৪১) ছোট গল্প লেখক রাশিয়ান ইহুদি। গুপ্তচরবৃত্তি সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগে সভিয়েট সিক্রেট পুলিশ ১৯৩৯- তাকে গ্রেফতার করে। যে অসম্ভব অবিচারের দুঃস্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন সেটা ফ্রানজ কাফকা তার দি ট্রায়াল উপন্যাসে কল্পনা করেন। ১৯৪০- বেবেল (৪৪) বাধ্য হন একটা স্বীকারোক্তি দিতে। তার মৃত্যুদণ্ড হয়। গুলি করে তাকে হত্যার আগে এই ছিল তার শেষ কথা
১৮.
আর সোয়া ঘণ্টা পরে আমি মারা যাব। নিজের দেশের মানুষের হাতে মরাটা কঠিন। কিন্তু এই বাড়িটা ঘিরে রাখা হয়েছে। আর হিটলার দেশদ্রোহিতার অভিযোগ করেছেন আমার বিরুদ্ধে। জার্মানির জন্য আফৃকাতে আমি যেসব কাজ করেছি, তার স্বীকৃতি স্বরূপ আমাকে বিষ খেয়ে মরার সুযোগ দেওয়া হয়েছেসেটা যদি আমি করি তাহলে আমার পরিবারের কারো বিরুদ্ধে অর্থাৎ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ওরা নেবে না। আমার কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও কোনো শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে না
আরউইন রোমেল (Erwin Rommel ১৮৯১১৯৪৪) জার্মান জেনারেল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একপর্যায়ে তিনি হিটলারের প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলেন এবং তাকে হত্যার চক্রান্তে যোগ দেন। সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হয়। রোমেল ধরা পড়েন। হিটলার তাকে দুটি বিকল্প দেন, ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যু অথবা বিষপানের আত্মহত্যা। রোমেল (৫২) দ্বিতীয় বিকল্পটি বেছে নিয়েছিলেন এবং বিষ খাওয়ার আগে এই কথাগুলো তার ছেলে ম্যানফ্রেডকে বলেছিলেন
১৯.
আমার কাহিনী হচ্ছে একটি প্রেমের কাহিনী। কিন্তু এটা বুঝবে শুধু তারাই যারা প্রেমের ফলে নির্যাতিত হয়েছে। আমার সম্পর্কে বলা হয়েছিল আমি আবেগবিহীন মোটা নারী। হ্যা, আমি মোটা। কিন্তু সেটাই যদি অপরাধ হয় তাহলে কয়জন নারীকে মোটা হওয়ার অপরাধে দোষী রায় দেয়া হয়েছে? আমি আবেগবিহীন স্টুপিড নই। বোকাও নই। আমার শেষ কথা এবং শেষ চিন্তা হলো : যে নিষ্পাপ সে যেন প্রথম পাথরটি ছুড়ে মারে
মার্থা বেক (Martha Beck, ..১৯২০..১৯৫১) আমেরিকার সিরিয়াল খুনি। স্থূলাঙ্গী নারী মার্থা বেক তার প্রেমিক রেমন্ড ফার্নান্ডেজ খুনের জন্য অভিযুক্ত হয়েছিল। ১৯৪৯- তাদের বিচার চলার সময়ে লোনলি হার্টস কিলার ((Lonely Hearts Killer) নামে মামলাটি পরিচিত হয়। মার্থা (৩০) রেমন্ড (৩৬) ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন দিয়ে লোনলি বা নিঃসঙ্গ নারীদের প্রলুব্ধ করে হত্যা করত। ১৯৫১- তে সিং সিং জেলখানায় মার্থা রেমন্ডের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়
২০.
জার্মানি দীর্ঘজীবী হোক। আর্জেনটিনা দীর্ঘজীবী হোক। অস্ট্রিয়া দীর্ঘজীবী হোক। এই তিনটি দেশের সঙ্গে আমি সবচেয়ে বেশি জড়িত ছিলাম এবং এটা আমি ভুলব না। আমার স্ত্রী, আমার পরিবার এবং আমার বন্ধুদের ভালোবাসা জানাচ্ছি। আমি রেডি। আমাদের আবার দেখা হবে। এটাই সবার নিয়তি। আমি ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে মরছি
অটো এডলফ আইখম্যান (Otto Adlof Eichman ১৯০৬১৯৫২) জার্মান নাৎসি লেফটেনান্ট কর্নেল। যুদ্ধ শেষের পরে বুয়েনস আইরেস, আর্জেন্টিনাতে পালিয়ে থাকেন। মোসাদ বাহিনী তাকে কিডন্যাপ করে ইসরেলে নিয়ে যায়। সেখানে বিচারে যুদ্ধ অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দণ্ডিত হন। আইখম্যানের (৫৬) ফাঁসি কার্যকর করা হয় ৩১ মে ১৯৬১-তে। এখন পর্যন্ত এটাই ইসরেলে বেসামরিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের একমাত্র ঘটনা
২১.
আমেরিকান ফ্যাসিজমের প্রথম ভিকটিম আমরা
ইথেল রোজেনবার্গ (Ethel Rosenberg, ২৫..১৯১৫১৯..১৯৫৩) অভিনেত্রী গায়িকা।
এটম বোমা স্পাই রূপে অভিযুক্ত ইলেকটৃক চেয়ারে মৃত্যুদণ্ড দণ্ডিত হয়েছিলেন। অনেকের মতে তিনি তার স্বামী, তারা দুজনই নিরপরাধ ছিলেন। ১৯৫৩- তে ইথেলের (৩৭) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে নিয়ম অনুসারে তিনটি ইলেকটৃক শকের পরেও তার মৃত্যু হয় না। তখন ডাক্তাররা পরীক্ষা করে বোঝেন ইথেলের হার্ট বিট চলছে। এরপর তাকে আরো দুটি ইলেকট্রিক শক দেয়া হয় ইথেলের মাথা থেকে ধোয়া বের হয়। তিনি মারা যান
২২
আমরা দুজনই নিরপরাধ। এটাই পূর্ণ সত্য। জীবন একটা অমূল্য সম্পদ। কিন্তু সেই সম্পদটাও রক্ষার জন্য এই সত্যটাকে অস্বীকার করা যাবে না। সত্য এড়িয়ে আমাদের জীবন কিনলেও আমরা সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতাম না
জুলিয়াস রোজেনবার্গ (Julius Rosenberg, ১২..১৯১৮১৯..১৯৫৩) ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। এটম বোমা স্পাই রূপে অভিযুক্ত ইলেকট্রিক চেয়ারে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত। একই অভিযোগে তার স্ত্রী ইথেলও দণ্ডিত হয়েছিলেন। জুলিয়াসের (৩৫) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ১৯৫৩-তে। প্রথম শকেই জুলিয়াস মারা যান
২৩.
হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। আমি একটা বুলেটপ্রুফ ভেস্ট (গেঞ্জি) চাই
জেমস ডাবলিউ রজার্স (James W. Rodgers – ১৯৬০) আমেরিকান ক্রিমিনাল। ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুর আগে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তার শেষ অনুরোধটা কি?
২৪.
আমি দেশের, জাতির ধর্মের বৃহত্তর মঙ্গলের জন্য তাকে হত্যা করতে রাজি হয়েছিলাম
তালদুয়ে সোমারায়া থিরো (১৯৯৫১৯৬২) বৌদ্ধ ভিক্ষু। ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৫৯-তে কলম্বোতে শ্রী লংকার প্রধানমন্ত্রী সলোমন বন্দরনায়েক (৬০)- কে তার বাসভবনে গুলি করে হত্যার পর আদালতে ওপরের উক্তিটি করেন থিরো। বিচার প্রাপ্ত থিরোর ফাসি হয় জুলাই ১৯৬২-তে। মুমূর্ষ অবস্থায় বন্দরনায়েক অনুরোধ করেছিলেন থিরোকে ক্ষমা করে দিতে এবং কোনো প্রতিশোধ না নিতে। বন্দরনায়েকের মৃত্যুর নয় মাস পরে ২১ জুলাই ১৯৬০- তার স্ত্রী শ্রীমাভো বন্দরনায়েক হন শ্রী লংকার এবং বিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী
২৫.
আমি এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছি। আমি যেভাবে বেঁচে আছি তেমনভাবে আগে কখনোই বাঁচিনী। ঈমানের (প্রকৃত বিশ্বাসের) মানে আমি বুঝতে পারছি। আকিদাহর (প্রকৃত ইসলামী বিশ্বাসের) মানেও আমি বুঝতে পারছিআমি শাহাদাতের জন্য অপেক্ষা করছি। এর চাইতে ভালোভবে আমি এর আগে আর কখনোই বাঁচিনী
সাইয়িদ কুতুব (১৯০৬-১৯৬৬) ইজিপ্টের ইসলামী তাত্ত্বিক, লেখক, কবি ইসলামি ব্রাদারহুড পার্টির অন্যতম নেতা। প্রেসিডেন্ট জামাল আবদুল নাসের চেষ্টা করেছিলেন তাকে নিজের পক্ষে টানতে। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হবার পরে একটি প্রহসনমূলক বিচারে কুতুবকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়
আদেশটি শোনার পরে কুতুবের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তিনি আদালতে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমি পনের বছর যাবৎ জেহাদ করে এই শাহাদত অর্জন করতে চলেছি। ফাঁসির সময়ে তার মুখে হাসি ছিল এবং তিনি হাত নেড়ে জেল গার্ডদের বিদায় জানান
২৬.
যা করে থাকি না কেন তার জন্য আমি গর্বিত। আমি ভীত নই। শেষে শুধু বলব, আমি আমার দেশ জাতিকে ভালোবাসি। জাতির প্রাণে আমি মিশে রয়েছি। কার সাহস আছে আমাদের আলাদা করবে? নিঃশঙ্ক চিত্তের চেয়ে জীবনে আর কোনো বড় সম্পদ নেই। আমি তার অধিকারী। আমি আমার জাতিকে তা অর্জন করতে ডাক দিয়ে যাই
আবু তাহের (১৪.১১.১৯৩৮২১..১৯৭৬) মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল। ১৯৭৫- সেনাবাহিনীতে সংঘটিত হত্যা দেশদ্রোহিতার অপরাধে ২৪ নভেম্বর ১৯৭৫- গ্রেফতার হন আবু তাহের। ২১ জুন ১৯৭৬- ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে তার বিচার শুরু হয়। বিচারের সময়ে আবু তাহের যে সুদীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছিলেন তার শেষাংশ ওপরে উদ্ধৃত হয়েছে। ১৭ জুলাই তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয় এবং ২১ জুলাই ১৯৭৬ সেটি কার্যকর করা হয়
২৭
ওই লোকটাকে আমি খুন করিনি। আমার আল্লাহ সেটা জানেন। আমি খুন করে থাকলে সেটা স্বীকার করার মতো সাহস আমার আছে। এখন যে বিপদ অপমানের মধ্যদিয়ে আমাকে যেতে হচ্ছে, তার চাইতে কম হতো ওই স্বীকারোক্তি করলে। কোনো আত্মমর্যাদা বোধ সম্পন্ন ব্যক্তি এই বর্বর বিচার সহ্য করতে পারেন না। আমি একজন মুসলিম। একজন মুসলিমের ভাগ্য নিয়ন্ত্রা আল্লাহ
আমি পরিষ্কার বিবেক নিয়ে তার সামনে দাঁড়াতে পারব। তাকে বলতে পারব একটা ধ্বংসস্তূপ থেকে আমি তার ইসলামী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে পুনর্গঠিত করে একটা সম্মানজনক অবস্থায় উন্নীত করেছিলাম। কোট লাখপত- এর দুর্বিষহ স্থানে আমি আমার বিবেক নিয়ে পূর্ণ শান্তিতে আছি। মৃত্যুর জন্য আমি ভীত নই। তুমি দেখেছ আগুনের মধ্য দিয়ে আমি কিভাবে হেটে গিয়েছি
জুলফিকার আলী ভুট্টো (..১৯২৮..১৯৭৯) পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৭- একটি সামরিক ক্যু-তে পদচ্যুত গ্রেফতার হন ভুট্টো। নতুন শাসক জেনারেল জিয়াউল হকের নির্দেশে ভুট্টোর বিচার হয় মার্চ ১৯৭৪- বিরোধী পলিটিশিয়ান আহমেদ রাজা কাসুরির পিতা আহমেদ খান কাসুরিকে গুলি করে হত্যার অপরাধে
হুকুমের আসামি রূপে ভুট্টোকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। তার প্রতিবাদ গ্রাহ্য হয় না। ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভুট্টো তার কন্যা বেনজিরকে যে শেষ চিঠি লিখেছিলেন তার কিছু অংশ ওপরে উদ্ধৃত হয়েছে। কথিত আছে, ফাসির মঞ্চে যাওয়ার সময়ে ভুট্টো (৫১) খুব ভীত হয়েছিলেন। তার মৃত্যুর জন্য দায়ী জিয়াউল হক প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সময় ১৯৮৪-তে একটি নাশকতামূলক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান
২৮.
মনে রেখ, আজ থেকে তুমি আমার সন্তানের মা- শুধু নও। তুমি তাদের পিতাও
নওয়াজিশ উদ্দীন (? – ১৯৮১) মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার সময়ে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত। সেপ্টেম্বর ১৯৮১-তে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে তার স্ত্রীকে লেখা চিঠির অংশ
২৯.
প্রিয় বিশ্বাসী জনগণ, আমি তোমাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি। কিন্তু আমি থাকব পরম করুণাময় আল্লাহর সঙ্গে। তার কাছে যারা আশ্রয় চান তিনি তাদের সাহায্য করেন এবং কখনোই কোনো বিশ্বাসীকে নিরাশ করেন নাআল্লাহ মহানআল্লাহ মহানআমাদের জাতি দীর্ঘজীবী হোকআমাদের সংগ্রামী জনগণ দীর্ঘজীবী হোকইরাক দীর্ঘজীবী হোকপ্যালেস্টাইন দীর্ঘজীবী হোকজেহাদ মুজাহেদিন দীর্ঘজীবী হোক
সাদ্দাম হোসেন (২৮..১৯৩৭৩০.১২.২০০৬) ইরাকের প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ১৩ ডিসেম্বর ২০০৩- তিনি ধরা পড়েন। বিচারে তার ফাসিতে মৃত্যুদণ্ড হয়। ৩৯ বছর (ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪এপ্রিল ২০০৩) ক্ষমতায় থাকাকালে সাদ্দাম হোসেনের নির্দেশে বহু ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। সাদ্দামের পতন অনিবার্য ভেবে তার দুই জামাই সপরিবারে জর্ডানে পালিয়ে গিয়েছিলেন
কিন্তু সাদ্দামের অনুরোধে এবং নিরাপত্তার আশ্বাসে তারা ফিরে এলে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। শ্বশুর সাদ্দামের নির্দেশে দুই জামাইয়ের ফাঁসি হয়েছিল। ইরাকে সাদ্দামবিরোধী আমেরিকা অভিযাগের পর একটি ইরাকি আদালতে ১৯৮২-তে ১৪৮ ইরাকি শিয়া হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে সাদ্দামকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। ফাঁসির পূর্ব মুহূর্তে মোবাইল ফোন ক্যামেরায় ধারণ করা সাদ্দামের (৬৯) ছবিতে তাকে অকুতোভয় দৃঢ়চেতা রূপে দেখা যায়। মৃত্যুর আগে সাদ্দাম তার উকিলকে শেষ যে চিঠি লিখেছিলেন তার কিছু অংশ ওপরে উদ্ধৃত হয়েছে
৩০.
তওবা আমি নিজেই জানি। আমি জিন্দা পীরের আওলাদ। আপনারা জানেন না, আমার পূর্বপুরুষরা ইয়েমেন থেকে এসেছিলেন। আমি নিজেও একজন পীর। তবে কখনো পীরগিরি করতে যাইনি। মৃত্যুকে কখনো ভয় পাইনিওই যে ড্রেসটি দেখছেন, সেটি আমি আগেই ধুয়ে রেডি করে রেখেছি। নামাজও আমি আগেই পড়েছিআমি জুতা পায়ে মঞ্চের দিকে যেতে চাই তবে মঞ্চে ওঠার আগে সেটা খুলে নেবেন
সৈয়দ ফারুক রহমান (? – ২৭.০১.২০১০) মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল। নভেম্বর ১৯৭৫- ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি চার আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যার অভিযোগে দণ্ডিত ফারুক তার ফাঁসি কার্যকর হবার আগে জেলের পেশ ইমাম জেল কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উক্তিটি করেন
৩১.
রিভিউ পিটিশনের আগেই আপনারা ফাঁসির প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। আমি কিন্তু জেল কোড ভালো করেই জানি
সুলতান শাহরিয়ার রশিদ (? – ২৭.০১.২০১০) মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল। নভেম্বর ১৯৭৫- ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি চার আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যার অভিযোগে দণ্ডিত সুলতান রশিদ তার ফাঁসি কার্যকর হবার আগে জেল কর্মকর্তাদের উদ্দেশে হাসিমুখে এই উক্তিটি করেন। এর আগে একটি শাদা কাগজে তিনি লেখেন, আমি একজন ফ্রিডম ফাইটার। এর সঙ্গে আমি জড়িত না। তাই নীতিগত কারণে রাষ্ট্রপতির কাছে আমি প্রাণভিক্ষা চাইতে পারি না
৩২.
আমাকে এই অবস্থানে ওঠানোর জন্য আল্লাহকে শত কোটি কৃতজ্ঞতা জানাই। সব বিশ্বাসীকেও আমার অভিনন্দন জানাই। কারণ আমরা সবাই একসঙ্গে সত্য ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছি এবং আমাদের শেষটাও হতেই হবে সত্য ন্যায়ের পথে। আমার পরিবারের প্রতি অনুরোধ, আমার মৃত্যুতে শোকার্ত না হয়ে তাদের উচিত হবে আমি যে অবস্থান অর্জন করেছি তাকে শ্রদ্ধা করা। আল্লাহ তোমাদের সবচেয়ে বড় রক্ষাকর্তা সাহায্যদাতা। আল্লাহ হাফেজ
আফজাল গুরু (১৯৬৯..২০১৩) কাশ্মিরে জন্ম হওয়া ইনডিয়ান ব্যবসায়ী যিনি কাশ্মিরিদের স্বাধিকারের পক্ষে ছিলেন। ২০০১- ইনডিয়ান পার্লামেন্ট ভবনে সন্ত্রাসী হামলায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে ওই বছরেই গ্রেফতার হন। ১২ বছর সলিটারি কনফাইনমেন্টে তাকে রাখা পর ফেব্রুয়ারি ২০১৩-তে আফজাল গুরুর (৪৩) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় দিল্লির তিহার জেলে। মৃত্যুর আগে তার পরিবাবের কাছে ১০ লাইনের শেষ চিঠির শেষাংশ ওপরে উদ্ধৃত হয়েছে
অপরাধী এবং নিরপরাধী উভয় ধরনের দণ্ডিত ব্যক্তিদের শেষ কথাগুলো থেকে আমরা যারা জীবিত আছি, তারা গভীরভাবে বিবেচনা করতে পারি, মৃত্যুদণ্ডের কার্যকারিতা তাতপর্য কি?
জীবনের অধিকার, রাইট টু লাইফ (Right to life) মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। আমরা বিবেচনা করতে পারি, মানুষের এই মৌলিক অধিকার হরণের ক্ষমতা রাষ্ট্রের থাকা উচিত কিনা?

Al Quran Audio